গত মে মাসে (২০২০) এর শেষের দিক থেকে কি মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে আমাকে যেতে হয়েছে, এবং এখনও হচ্ছে... ফেব্রুয়ারি মাসে আমি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। সেই সময়ই আমাদের বাসায় যিনি কাজ করতেন, তার ছেলের একটি সমস্যার কারণে তাকে দেশে যেতে হয়। এরপর লকডাউন এর কারণে তিনি আর ফিরে আসতে পারছিলেন না। আমার মা সিবিজি রুগী। আমার বড় বোন লন্ডনে থাকেন। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন এই অবস্থায় মা আমার খালার বাসায় থাকলেই ভালো হয়। আমার দুটি পোষা বেড়ালের মধ্যে হুলো এবং অপরটির নাম ছিলো মলি। একা বাসায় অসুস্থ অবস্থায় আমি ওদের দেখাশোনা করতে পারছিলাম না। করনা কালীন একা বাড়িতে অসুস্থা অবস্থায় আমার প্রচন্ড প্যানিক ও হচ্ছিলো। আমি মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম যে আমাদের বাসায় যিনি কাজ করতেন, তিনি আর জীবিত ফিরে আসবেন না। রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকবে, দুর্ভিক্ষ হবে, ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাবে, মানুষ তখন ঘরে ঘরে ধুকে ডাকাতি করবে। এমন একটা ধারণা অনেকেরই হয়েছিলো। প্যানিক থেকে প্রায় আমার নাক থেকে রক্ত পড়ত। দুশ্চিন্তা থেকে পেটে ব্যথা প্রচন্ড বেড়ে গিয়েছিলো। বেশী টেনশান হতো হুলো মলিকে নিয়ে। আমি ওদের ঠিক মতন দেখাশোনা করতে পারছিলাম না, ওরা যদ
নির্ভয়ার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি (A Tribute to Nirbhaya - India's daughter)
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
লিখেছেন
Laura Mohiuddin
-
নির্ভয়া (Nirbhya) একটি ভারতীয় শব্দ যার অর্থ নির্ভীক কিংবা সাহসী। এই শব্দটি প্রয়োগ করা হয় ভয়কে জয় করা কোনো সাহসী নারীর উপর। এই শব্দটি জনপ্রিয়তা লাভ করে ২০১২ সালে দিল্লিতে সংঘটিত হওয়া গনধর্ষণ ঘটনায় একজন তরুণীর সকরুণ মৃত্যুকে কেন্দ্র করে। মেয়েটিকে এই উপাধিতে ভূষিত করা হয় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করা পর্যন্ত তার সাহসী সংগ্রামের জন্য।
ভারতীয় আইন মোতাবেক কোনো ধর্ষণ কবলিত মহিলার প্রকৃত নাম কোনো সংবাদ মাধ্যমের কাছে প্রাথমিক ভাবে প্রকাশ করা আইন বিরোধী কর্ম।এই কারণে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম বিভিন্ন ছদ্ম নামে মেয়েটিকে উল্লেখ করে খবর প্রচারিত করেছে।উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত নামগুলি হচ্ছে ---১.জাগ্রতি(সতর্কতা), ২.জয়তি(অগ্নিশিখা),ডেমিনি(বজ্রাঘাত) এবং দিল্লির সাহসীহৃদয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে, ২০১২ সালে দক্ষিন দিল্লিতে সংঘটিত হয় এক মারাত্মক গণধর্ষণের ঘটনা। কথিত সালের ১৬ই ডিসেম্বর ২৩ বৎসর বয়সী একজন ফিজিওথেরাপিস্ট ইন্টার্ন তরুণী চলছিল একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন বাসে চড়ে। সাথে ছিল তার বন্ধু। সময় সন্ধ্যা সমাগত। একে একে নেমে যায় বাসের সব যাত্রীরা।থাকে শুধু দুজন। উল্লেখিত তরুণী আর তার বন্ধুটি।বাসটি এসে দাঁড়ায় একটি নির্জন এলাকায়। দুজন যাত্রী ছাড়া বাসটিতে আর ছিল ড্রাইভার, হেলপার সহ ছজন পরিবহন কর্মী।
নির্জনতাকে পুঁজি করে অকস্মাৎ ছজন পরিবহন কর্মী একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়ে তরুণীটির দেহতটে।মেরে কাবু করে দূরে ছুড়ে মারে বন্ধুটিকে। তারপর ছজন নরপশু গনহারে তরুণীটির উপর চালায় পাশবিক যৌন নির্যাতন। ক্ষত বিক্ষত হতে নির্যাতিতার সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ।বহু পরে পুলিশ এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় নির্যাতিতাকে। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। মৃত্যু তখন তার দূয়ারে কড়া নাড়তে শুরু করেছে।মৃত্যুর সাথে যন্ত্রণাময় পান্জা নড়তে নড়তে কেটে যায় এগারোটা দিন।অবশেষে উন্নততর চিকিৎসার জন্য তাকে স্থানান্তরিত করা হয় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে। সেখানে ও লাভ হলোনা কিছু। ডাক্তারদের সকল প্রচেষ্টাকে ব্যার্থ করে দিয়ে নির্যাতিতার সকল যন্ত্রণার মুক্তি মিলল মিলল মৃত্যুর মধ্য দিয়ে।
ঘটনাটা বিশালাকারে ছড়িয়ে পড়লো ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়।প্রবল ভাবে উঠলো সমালোচনা আর নিন্দার ঝড়। পরিশেষে দিল্লির প্রতিবাদী জনতা সোচ্চার হলো কেন্দ্রীয় সরকারের নারীর যথাযোগ্য নিরাপত্তা দানের ব্যার্থতার বিরুদ্ধে। প্রতিবাদীদের সাথে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। এমন প্রতিবাদ আর সংঘাত ক্রমাগত ছড়িয়ে পড়ে আরো অনেক নগরীতে,শহরে।
যেহেতু ভারতীয় আইননুসারে ধর্ষণ ভিকটিমের নাম প্রকাশ বেআইনি তাই ধর্ষণের শিকার এই মর্মস্পর্শী নারীটি পরিচিত হলো নির্ভয়া নামে। এবং সেই সাথে প্রতিকী হয়ে রইল ধর্ষণের বিরুদ্ধে নারীদের নির্ভীক সংগ্রামের।
এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি
Approved members list for #পিক্সেলেন্ট_লকডাউন_প্রতিযোগিতা
লিখেছেন
Laura Mohiuddin
-
৭টি মাস্টার কম্পজিশন যা আপনার অবশ্যই চেষ্টা করা উচিৎ একজন বিগিনার ফটোগ্রাফার হিসেবে
আপনি যদি মোবাইল দিয়ে কিংবা ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, কিন্তু কিসের ছবি তুলবেন, আর কিভাবে তুলবেন, এই শংকায় থাকেন তবে লেখাটি আপনার জন্য। লেখাটি পড়ে ৭ দিন প্রাক্টিস করলেই আপনি পেতে পারেন অসাধারণ ফলাফল. ৭ দিনে ফটোগ্রাফী মানে এই না, যে ৭ দিন পরেই আপনি অসাধারণ ফটোগ্রাফার হয়ে যাবেন। ৭ দিনের ফটোগ্রাফিতে আমরা ফটোগ্রাফির ৭ টি মৌলিক কম্পজিশন নিয়ে কথা বলব। কম্পজিশন কী ? ছোট বেলায় গরুর রচনা পড়িনি, এমন কাউকে খুজে পাওয়া কিছুটা দুষ্কর অন্তত যারা এই ব্লগ টি পড়ছেন। গরু রচনায় যেমন পড়েছিলাম , গরুর চারটি পা আছে , একটি মাথায় দুটি কান,দুটি চোখ আছে , এবং একটি লেজ আছে। কম্পোজিসন হল রচনা। রচনায় শিল্প গুন সর্বাধিক।শিল্পের কোন কাজের হতে পারে কোন লেখা, গান, কিংবা ছবি বা সিনেমা,আপেক্ষিক বস্তু এবং উপাদান গুলোর স্থান নির্ধারণ এবং বর্ণনা করা। এখন আসি ফটোগ্রাফির কম্পজিশনে। কম্পজিশন ব্যাপার টা বুঝতে পারলে ,ফটোগ্রাফিক কম্পোজিশনটা আমাদের কাছে অনেক সোজা হয়ে আসবে। একটি ছবিকে কম্পোজিং করা বলতে বুঝায়, আপনার আইডিয়া কিংবা আর্ট এর উপদান গুলোকে এমন ভাবে সাজানো যেন আপনি যা আপনার ছবির মধ্যমে বুঝাতে চান তা সঠিক ভা
প্রাণী প্রেমের নামে আমাদের হত্যা করা হয়েছে - মলি (২০১৭ - ১১ জুন, ২০২০)
লিখেছেন
Laura Mohiuddin
-
গত মে মাসে (২০২০) এর শেষের দিক থেকে কি মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে আমাকে যেতে হয়েছে, এবং এখনও হচ্ছে... ফেব্রুয়ারি মাসে আমি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। সেই সময়ই আমাদের বাসায় যিনি কাজ করতেন, তার ছেলের একটি সমস্যার কারণে তাকে দেশে যেতে হয়। এরপর লকডাউন এর কারণে তিনি আর ফিরে আসতে পারছিলেন না। আমার মা সিবিজি রুগী। আমার বড় বোন লন্ডনে থাকেন। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন এই অবস্থায় মা আমার খালার বাসায় থাকলেই ভালো হয়। আমার দুটি পোষা বেড়ালের মধ্যে হুলো এবং অপরটির নাম ছিলো মলি। একা বাসায় অসুস্থ অবস্থায় আমি ওদের দেখাশোনা করতে পারছিলাম না। করনা কালীন একা বাড়িতে অসুস্থা অবস্থায় আমার প্রচন্ড প্যানিক ও হচ্ছিলো। আমি মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম যে আমাদের বাসায় যিনি কাজ করতেন, তিনি আর জীবিত ফিরে আসবেন না। রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকবে, দুর্ভিক্ষ হবে, ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাবে, মানুষ তখন ঘরে ঘরে ধুকে ডাকাতি করবে। এমন একটা ধারণা অনেকেরই হয়েছিলো। প্যানিক থেকে প্রায় আমার নাক থেকে রক্ত পড়ত। দুশ্চিন্তা থেকে পেটে ব্যথা প্রচন্ড বেড়ে গিয়েছিলো। বেশী টেনশান হতো হুলো মলিকে নিয়ে। আমি ওদের ঠিক মতন দেখাশোনা করতে পারছিলাম না, ওরা যদ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন